Sunday, July 6, 2008

kurigram memories শিক্ষা এবং.....

:37 AM 7/6/2008
জীবন দে বিদ্যালয়ের নাম উল্লেখ করেন নি। এক স্থানে বলেছেন- স্কুল এর গেম টীচার ছিলেন ভবতোষ রায়। তাঁর লেখা থেকে জানা যাচ্ছে ,ত্রিশ এর দশকের প্রথম দিকে যখন বন্দী মুক্তি আন্দোলনের জেরে রাজবন্দীদের জেল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা হচ্ছে ,প্রধান শিক্ষক গেম টীচারকে ডেকে ছাত্রদের উপর নজর রাখতে বললেন। নির্দেশ দিলেন- ছাত্ররা যেন কারা মুক্ত রাজবন্দীদের সাথে মেলামেশা না করে,তাদের থেকে দূরে থাকে। অনুমান করি, স্কুলটি ছিল কুড়িগ্রাম হাই ইংলিশ স্কুল।অনুমানের ভিত্তি? একদা কুড়িগ্রাম এর অধিবাসী অমরেন্দ্র প্রসাদ লাহিড়ীর ড়ায়েরীর কয়েকটি পাতা,যা থেকে ত ৎকালীন কুড়িগ্রাম এবং সন্নিহিত অঞ্চলের কিছু চিত্র পাওয়া যাবে। "... যদিও আমাদের পারিবারিক বাড়ী পাবনা জেলায় ছিল কিন্তু আমাদের পিতামহের আমল হইতে কর্মস্থল তাঁহাদের ছিল রঙ্গপুর জেলায়।বাবার কর্মস্থল কুড়িগ্রাম মহকুমার নুনখাওয়া নামক বন্দরে ছিল। বন্দরের নিকট দিয়া ব্রহ্মপুত্র নদ প্রবাহিত ছিল।প্রতি বৎসর চৈত্র মাসে প্রায় মাসাধিক কাল ধরিয়া একটি বিশাল মেলা বসিত। আমাদের বাল্যকালে যখন সিনেমা থিয়েটারের প্রচলন ছিল না-ঐ মেলা আমাদের আনন্দ লাভের একমাত্র স্থল ছিল।উহার জন্য সমস্ত বৎসর ধরিয়া অপেক্ষা করিতাম।" তিনি লিখছেন- " গ্রামাঞ্চলে শিক্ষিত লোকের অভাব ছিল। ফলে আমাদের লেখাপড়া মোটেই ভালভাবে অগ্রসর হয় নাই। পরে নিবারণ সান্যাল মহাশয় আমাদের গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন- তাঁহার প্রচেস্টায় আমরা খুব তাড়াতাড়ি লেখাপড়ায় উন্নতি করি এবং আমি ও মেজদা (শচীন্দ্র প্রসাদ)১৯২৬ সনে কুড়িগ্রামে তৃতীয় ও ৪র্থ শ্রেণীতে ভর্তি হই। সে সময়ে আজকালের মত মাধ্যমিক বিদ্যালয় তো দূরের কথা,প্রাথমিক বিদ্যালয়ও সর্বত্র ছিল না। আমাদের নিকটতর বিদ্যালয় (১০ মাইল)কুড়িগ্রাম উচ্চ ইংরাজী বিদ্যালয়। আমি ও মেজদা সেই বিদ্যালয়ে ভর্তি হইলাম। ১৯২৭ সনে আমাদের চতুর্থ ভ্রাতা রবি তৃতীয় শ্রেনীতে ভর্তি হয়। তাহার দুই বৎসর পর আমাদের ৫ম ভ্রাতা বীরেন্দ্র ঐ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।১৯২৪ সনে আমাদের বড়দা অন্নদা প্রসাদ ঐ বিদ্যালয় হইতে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯২৬ সনে আমার বয়স ১২ বৎসর। ....."".......... কুড়িগ্রাম শহর ধরলা নদীর তীরে অবস্থিত। আমাদের সময় এবং দেশ ভাগের পর ১৯৫০ সন পর্যন্ত কোন পাকা রাস্তা ,বিদ্যুৎ বা আধুনিক নাগরিক জীবনের কোন ব্যবস্থা শহরে ছিল না।থাকিবার মধ্যে ২ টি থিয়েটার হল ছিল। উহাতে মাঝে মাঝে শহরের গন্যমাণ্য ব্যক্তিগণ নিজেরা সখের থিয়েটার করিতেন। তাহাতে আমাদের বিদ্যালয়ের কোন কোন শিক্ষকও অংশ গ্রহন করিতেন জন্য আমাদের খুব সন্তর্পণে এবং গোপনে উহা দেখিতে হইত। একটু উপরের শ্রেণীতে

যখন উঠিয়াছি সে সময় কলিকাতা হইতে থিয়েটার দল অভিনয় করিতে কুড়িগ্রামে যায়। যেহেতু সেই সব দলে স্ত্রী চরিত্রে নারীরা অভিনয় করিতেন সেই জন্য আমাদের স্কুল হইতে নোটিশ দিয়া উহা দেখিতে নিষেধ করা হইয়া ছিল-ইহা বেশ স্মরণে আছে। আমাদের সময় প্রধান শিক্ষক শ্রী ইন্দুভূষণ রায়,বি.এ. খুব প্রভাবশালী এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক ছিলেন। তাঁহার ইংরাজী পঠন-পাঠন খুবই আকর্ষনীয় ছিল। নিজে উচ্চ শিক্ষা লাভ করিতে পারি নাই কিন্তু শুনিয়াছি তখনকার দিনে কুড়িগ্রাম স্কুলের ছাত্ররা অতি সহজে কলেজের অধ্যাপকদের ইংরাজী পঠন-পাঠন অনুসরণ করিতে পারিত।....."

2 comments:

সুশান্ত বর্মন said...

অনেক পুরনো তথ্য জানলাম। ইতিহাসকে পুনরুজ্জীবিত করার এ প্রয়াস সত্যিই প্রশংসাজনক।

আপনাকে ধন্যবাদ।

ASHOK LAHIRI অশোক লাহিড়ী said...

আগ্রহ নিয়ে পড়া এবং মতামত দেয়াতে আমি উতসাহিত বোধ করছি। আপনাকে ও ধন্যবাদ।এই বিদ্যালয়টি-ই রীভার ভিউ স্কুল?