Thursday, August 28, 2008

কুড়িগ্রাম অন্য বই-এ

5:51 PM 8/28/2008

ইতিপূর্বে নানা প্রসঙ্গে সুধীর মুখার্জীর নাম উল্লেখ করেছি।এবার তাঁর লেখা একটা বই এর উল্লেখ করব। বইটার নাম 'রংপুর জেলার কৃষক আন্দোলনের ইতিহাস ও পারটি'।নৃপেন ঘোষের সাথে যৌথভাবে লেখা বইটি ১৯৮৫ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিলো।বইটির ভূমিকা লিখেছিলেন মুহম্মদ
আবদুল্লাহ রসুল।লেখকদ্বয় বক্তব্যে বলেছেন এটা কোন গভেষণামূলক বই না।সামনে লিখিত লিলপত্রের অভাবে কএকজনের স্মৃতি ভান্ডার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে এই কাজে তাঁরা হাত দিয়েছেন।এপার বাংলা ওপার বাংলার তৎকালীন অনেক নেতা সারা দিয়েছেন এবং তাঁদের যতখানি
মনে আছে লিখিত ভাবে দিয়েছেন ।যাঁরা স্মৃতি থেকে সাহায্য করেছেন তাঁদের মধ্যে বলরাম সাহার নাম প্রথমে উল্লেখ করা হয়েছে।বিশেষভাবে সাহায্য করেছেন বিজয়রায়,রথীন গাঙ্গুলী,বিমল ভৌমিক।রাণী মুখার্জী,মনিকৃষ্ণ সেন,শঙ্কর বোস,কছির উদ্দীন,আবুল মোকসেদ,হানিফ
ভূইয়া,হরিকান্ত সরকার এবং বিষাদু বর্মণ।
কুড়িগ্রামের প্রসংগ যে ভাবে বইয়ে উল্লিখিত আছে,তা দেখা যেতে পারে। 'কুরিগ্রাম মহকুমার দক্সিনাঞ্চলে পাট লম্বা হয়,তার ফলন বেশি। কুরিগ্রাম মহকুমার খ্যান সম্প্রদায়ের কিছু অধিবাসী ছিলেন,

ছাত্র ফেডারেশন করতেন জীবন দে,ইন্দু মুখারজি,অনিল গোবিন্দ দেব, সুনিল মুখারজি,হৃষিকেশ ভট্টাচার্য। ১৯২১ এর আন্দোলনের যুগে বিদ্রোহী কবি নজরুল কএকবার কুরিগ্রামে ওয়াজে এসে বিপুল সমাবেশে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে গেছেন, ব্রহ্মপুত্র নদের অপর তীরে তুরা পাহাড়ের (গারো পাহাড়) পাদদেশে রংপুর জেলার রৌমারি থানা।রৌমারি থানার আব্দুল মজিদ বলে একজন বিশিষ্ট নেতাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আনে।সঙ্গে সঙ্গে
রৌমারি থানা,চিলমারী থানা, উলিপুর থানা,ও কুড়িগ্রাম থানা ভেঙ্গে লক্ষাধিক মানুষ অফুরন্ত স্রোতে মহকুমা শহরটি প্রায় অবরোধ করে বসে।সর্বত্র 'কি হয়, কি হয়' ভাব।জনতা ক্ষিপ্ত। শেষে মজিদ সাহেব কে ছেড়ে দেওয়া হয় ।জনসাধারণ মজিদ সাহেবকে নিয়ে বিজয় উল্লাসে ফিরে
যান।(এটা গান্ধিজীর অসহযোগ আন্দোলনের কালে মহাজনদের চালানী ধানের নৌকা আটক করার কারণে ঘটেছিল।)

কুড়িগ্রামের কৃষক প্রজা সমিতির প্রথম সারির নেতা ছিলেন কাজী এমদাদুল হক।শ্রী মুরারি মোহন
দাস কাজী সাহেবের ঘনিশ্ষ্ঠ ছিলেন।তিনি কংগ্রেশের জনপ্রিয় কর্মি ছিলেন।সে সময়ে তাদের পথ
ছিল সংস্কার বাদি। আইনসভার নির্বাচন ছিল মুখ্য।এঁরা সাম্প্রদায়িক বিরোধী জাতীয়তাবাদী ছিলেন।

১৯৩৭ সালে সুধীর মুখারজীকে রংপুরে সগৃহে অন্তরীণ করা হলে তিনি কুড়িগ্রামে কৃষক আন্দোলনের কাজ আরম্ভ করেন। সুধির মুখার্জী মহকুমায় কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলেন।তিনি মহকুমা ও শহর কংগ্রেসের সম্পাদক ছিলেন।

3 comments:

সুশান্ত বর্মন said...

শ্রদ্ধেয় অশোক লাহিড়ী,
আপনাকে ধন্যবাদ। আমাদের কুড়িগ্রামে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এসেছিলেন, এটা জানতাম না। উল্লিখিত বইয়ের লেখক অবশ্য কোন রেফারেন্স দিতে পারেন নি। অন্যের স্মৃতি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে খবরটি সরবরাহ করেছেন। তারপরও নজরুল কুড়িগ্রামে এসেছেন এটা ভাবতেই শিহরিত বোধ করছি।
এই বিশেষ সংবাদটি জানানোর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

এছাড়াও, কুড়িগ্রামের যে ইতিহাস আপনি নিয়মিত প্রকাশ করে যাচ্ছেন, তা কোন বইতেই পাওয়া যায় না। অমরেন্দ্রপ্রসাদ লাহিড়ীর লেখা দিনলিপি থেকে পাওয়া এই তথ্যগুলো আমাদের অর্থাৎ নতুন প্রজন্মের চোখে কুড়িগ্রামকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করবে এতে কোন সন্দেহ নেই। দেশভাগপূর্বকালে কুড়িগ্রামে আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক অবস্থা সম্পর্কে আরও আরও তথ্য চাই।
ধন্যবাদ

ASHOK LAHIRI অশোক লাহিড়ী said...
This comment has been removed by the author.
ASHOK LAHIRI অশোক লাহিড়ী said...

প্রিয় শ্রী সুশান্ত বর্মন,

নজরুল ইসলাম এর সাথে রঙপুর এর যোগাযোগ সুবিদিত এবং সুপ্রতিস্ঠিত।সম্প্রতি রঙ্গপুর গবেষণা পরিষদ দ্বারা প্রকাশিত (প্রথম প্রকাশ জুলাই ১৯০৭ )'রঙপুরের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব' নামে একটা সুবৃহৎ গ্রন্থ হাতে এল।ঐ গ্রন্থের ৭৩ থেকে ৭৮পৃষ্ঠায় রঙ্গপুরের সুসন্তান অতুলচন্দ্র গুপ্তর জীবনী লিখিত আছে। সেখানে একটা তথ্য অনুপস্থিত। কলকাতা High Court এ Advocate থাকা কালীন তিনি ১৯২৫ সালে নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে নিখিল বঙ্গীয় প্রজা সম্মিলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন।এই সম্মেলন অধিবেশনের অন্যতম কর্মকর্তা ছিলেন নজরুল ইসলাম।মুজফ্ফর আহমদ রচিত 'কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথা'পড়লে নজরুলের কুড়িগ্রাম গমনের প্রেক্ষিত জানা সহজতর হবে আমার বিশ্বাস।